আয়মান সাদিক এর স্বপ্ন
গত ৬-৭ বছরে টেন মিনিট স্কুল বাদে আর কিছু নিয়ে চিন্তা করা হয়নি। অনেক কিছু করার ইচ্ছা থাকলেও অনেক সময় করা হয়ে ওঠেনি কারণ টাকা ছিলো না।
অনেক পরিকল্পনা অর্ধেক রাস্তায় গিয়ে থেমে যেত। সবসময় মনে হতো আর কিছু টাকা থাকলেই এসব করে ফেলা যেত। সেই অপূর্ণ ইচ্ছাগুলো মেটাতেই ফান্ডরেইজিংইয়ের পেছনে গত এক বছর সময় দেওয়া। এই পুরো সময়টা আমি আসলে অনেক কিছু থেকেই একটু বিচ্ছিন্ন ছিলাম। অনেক জায়গায় সময় দিতে পারিনি বলে আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আলহামদুলিল্লাহ, সবার সহযোগিতায় এখন যেহেতু টাকার একটা ব্যবস্থা হয়ে গেছে, এখন সময় সেই অপূর্ণ স্বপ্নগুলোকে বাস্তবে রূপদান করার।
এখন মাথায় যা আসছে সেটার একটা লিস্ট করে ফেলি:
- ১। এতদিন 3D ভিডিও বানাতে পারিনি। এখন সব কঠিন টপিকের 3D ভিডিও বানাতে চাই।
- ২। সার্ভারের খরচের ভয়ে আমাদের অ্যাপে লাইভ ক্লাস না নিয়ে সব সময় ফেইসবুক আর ইউটিউবে নিয়েছি। এখন আমাদের নিজেদের অ্যাপে লাইভ ক্লাসগুলো নিতে চাই, যেন স্বল্প ব্যান্ডউইডথেও আমাদের শিক্ষার্থীরা সহজেই ক্লাস করতে পারে।
- ৩। অনেক ট্যালেন্টেড আর এক্সপেরিয়েন্সড মানুষের সাথে কাজ করার ইচ্ছা ছিলো। এখন একটু সাহস করে টেন মিনিট স্কুলে জয়েন করার জন্যে বলতে চাই।
- ৪। নিজেদের অনেকগুলো স্টুডিও তৈরির ইচ্ছা ছিলো। ভিডিও কোয়ালিটি আরো অনেক ভালো করতে চাই।
- ৫। সায়েন্স ল্যাব করার ইচ্ছা ছিলো যেখানে সবসময় এক্সপেরিমেন্টগুলোর ভিডিও করা যাবে।
- ৬। রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ল্যাব বানাতে চাই, যেখানে সবসময় নতুন নতুন প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ চলতে থাকবে।
- ৭। কয়েকশ ট্যালেন্টেড টিচারের সাথে কাজ করতে চাই। বাংলাদেশের বেস্ট টিচারদের সারাদেশের ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে পৌঁছে দিতে চাই।
- ৮। কয়েক হাজার নতুন অনলাইন টিচারকে ট্রেইন করতে চাই, যেন তারা পরবর্তী প্রজন্মকে আরো ভালো কন্টেন্ট উপহার দিতে পারে।
- ৯। আমাদের ৩০০ জনের টিমকে ১,০০০ জনের টিম বানাতে চাই যারা সার্বক্ষণিক নতুন কী কী কন্টেন্ট বানানো যায় সেটা নিয়ে চিন্তা করতে থাকবে।
- ১০। আমাদের প্রতিটা কোর্সের জন্যে আলাদা আলাদা সেট ডিজাইন করে একদম মুভি লেভেলের টিউটোরিয়াল বানাতে চাই।
- ১১। Augmented Reality নিয়ে ফেলে আসা প্ল্যানটা আবার শুরু করতে চাই।
- ১২। অনলাইনে বিবিএ/এমবিএ কোর্সগুলো সবার জন্যে উন্মুক্ত করতে চাই।
- ১৩। ২-৮ বছর বয়সী বাচ্চাদের জন্য বাংলায় সবকিছু শেখার একটি পরিপূর্ণ অ্যাপ বানাতে চাই।
- ১৪। ইংরেজি শেখার জন্যে Speech Processing ব্যবহার করে শেখার আর প্র্যাকটিস করার অ্যাপ বানাতে চাই।
- ১৫। দেশের ৫০০+ কোম্পানির জন্যে দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে ইন্ডাস্ট্রি স্পেসিফিক কোর্স তৈরি করতে চাই।
- ১৬। প্রতিটি জেলায় এক্সপেরিয়েন্স সেন্টার বানিয়ে ইন্টারনেট ডিটাচড মানুষদেরকে প্ল্যাটফর্মে আনতে চাই।
- ১৭। পৃথিবীর সব বড় বড় ইনভেস্টরদেরকে বাংলাদেশ চেনাতে চাই।
আজকে আর কথা না বাড়াই। একটু বেশি আবেগী হয়ে লিস্টটা বেশি বড় করে ফেলেছি মনে হয়। সবগুলো বাস্তবায়ন করতে আরো টাকার প্রয়োজন হবে আসলে। সেটার জন্যে এখন উঠে পড়ে কাজ করতে চাই।
গত এক বছর আমাদের পুরো টিম এই ফান্ডরেইজিংয়ের জন্যে দিনরাত কষ্ট করেছে। সত্যি বলতে এখন আর আমি না থাকলেও আমাদের টিম পুরোটা চালিয়ে নিতে পারবে। এমন একটা টিমের সাথে কাজ করতে পারা আসলে একটা বিশাল পাওয়া।
